Translate

Friday, December 30, 2016

যুগে যুগে মাযহাবের অনুসারী ছিলেন এমন ইমামগনের তালিকা :

মাযহাবের অনুসারী বিখ্যাত হাদীস বিশারদগণ

--------------------------------
যারা হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন -
--------------------------------
১. ইমাম ত্বহাবী (রহঃ)
২. ইমাম যাইলায়ী (রহঃ)
৩. আল্লামা আইনী (রহঃ)
৪. আল্লামা আলাবী (রহঃ)
৫. আল্লামা ইবনে বালবান (রহঃ)
৬. ইমাম আলমুত্তাকি আল-হিন্দি (রহঃ)
৭. মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ)
৮. শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ)
৯. শাহ আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ)
১০. আব্দুল হাই লাখনবী (রহঃ)
১১. শায়খ যাকারিয়া কান্ধলবী (রহঃ)

উস্তাদ-ছাত্র সম্পর্কঃ



প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, বড় বড় মুহাদ্দিসগণ যারা
হাদীসের কিতাব রচনা করেছেন, তাদের প্রায়
সকলেই পরোক্ষভাবে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর
ছাত্র। হাদীস গ্রহণের ক্ষেত্রে এই উস্তাদ-ছাত্র
সম্পর্কের কয়েকটি নমুনা নিচে পেশ করা হল- ‪

‎ইমাম‬ আবু হানিফা (রহঃ)→ ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) → বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন→
ইমাম বোখারী (রহঃ)

ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) → বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন→
ইমাম মুসলিম (রহঃ)

ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) → বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন→
ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) → ইমাম নাসায়ী (রহঃ)

ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) → বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন→
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আবু ইয়ালা (রহঃ)

‎ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহঃ) → মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া ইবনে আকছাম
(রহঃ) → ইমাম তিরমিযি (রহঃ) → ইমাম ইবনে মাজাহ (রহঃ)

‎ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ) → ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) → ইমাম আহমাদ
ইবনে হাম্বল (রহঃ) ‪

‎ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → শায়েখ মুসঈর বিন কুদাম (রহঃ) → ইমাম বোখারী (রহঃ) → ইমাম
ইবনে খোজাইমা (রহঃ) → ইমাম দারে কুতনী (রহঃ)

ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → শায়েখ মুসঈর বিন কুদাম (রহঃ) → ইমাম বোখারী (রহঃ) → ইমাম ইবনে খোজাইমা→ ইমাম হাকেম (রহঃ) → ইমাম বাইহাকী (রহঃ)

‎ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → শায়েখ মক্কী বিন ইবরাহিম (রহঃ) → শায়েক আবু আওয়ানা (রহঃ) →ইমাম
তাবরানী (রহঃ)

ইমাম‬ আবু হানীফা (রহঃ) → শায়েখ মক্কী বিন ইবরাহিম (রহঃ) → শায়েখ আবু আওয়ানা (রহঃ) →
ইবনে আদী (রহঃ)।

-----------------------------
যারা মালেকী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
-----------------------------
১. আল্লামা ইবনু আব্দিল বার (রহঃ)
২. আল্লামা কাযী ইয়ায (রহঃ)
৩. ইবনুল মুনীর (রহঃ)
৪. ইবনে বাত্তাল (রহঃ)
৫. আল্লামা ইবনুল আরাবী (রহঃ)
৬. আল্লামা যারকানী (রহঃ)

যারা শাফেয়ী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
------------------------------
১. ইমাম তিরমিযি (রহঃ)
২. আল্লামা ইবনে খোজাইমা (রহঃ)
৩. ইমাম দারে কুতনী (রহঃ)
৪. ইমাম হাকেম (রহঃ)
৫. ইমাম বাইহাকী (রহঃ)
৬. খতীবে বাগদাদী (রহঃ)
৭. ইমাম রওয়ানী (রহঃ)
৮. ইমাম ইবনে আসাকির (রহঃ)
৯. আল্লামা ইবনুস সালাহ (রহঃ)
১০. ইমাম নববী (রহঃ)
১১. ইমাম ইবনে জামাআ (রহঃ)
১২. আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ)
১৩. ইমাম সাখাবী (রহঃ)
১৪. জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ)

যারা হাম্বলী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন,
-----------------------------
১. ইমাম আবু দাউদ (রহঃ)
২. ইমাম নাসায়ী (রহঃ)
৩. ইমাম ইবনে মাজা (রহঃ)
৪. ইমাম দারিমী (রহঃ)
৫. আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ (রহঃ)
৬. আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহঃ)
৭. আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ)
৮. ইবনু আব্দিল হাদী (রহঃ)

মাযহাবের অনুসারী বিখ্যাত তাফসীরবিদগণ

---------------------------
যারা হানাফী মাযহাব অনুসরণ করেছেন-
----------------------------
১. ইমাম জাছ্ছাস (রহঃ)
২. ইমাম আলুসী (রহঃ)
৩. ইমাম নাসাফী (রহঃ)
৪. কাযী সানাউল্লাহ পানিপতি (রহঃ)
যারা মালেকী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন,
-----------------------------
১. আবু বকর ইবনুল আরাবী (রহঃ)
২. ইমাম কুরতুবী (রহঃ)
৩. ইমাম ইবনে আ’শূর (রহঃ)
যারা শাফেয়ী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন,
-----------------------------
১. ইমাম বাগাবী (রহঃ)
২. ইবনে কাসীর (রহঃ)
৩. ইমাম বায়যাবী (রহঃ)
৪. জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ)
৫. জালালুদ্দিন মহল্লী (রহঃ)
৬. ইমাম যারকাশী (রহঃ)
যারা হাম্বলী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন,
----------------------------
১. ইবনুল যাওযী (রহঃ)
২. আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)

মাযহাবের অনুসারী উসুলে ফিকাহের বিখ্যাত

ইমামগণ


------------------------------
যারা হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
-----------------------------
১. আল্লামা ইবনুল হুমাম (রহঃ)
২. ইমাম সারাখসী (রহঃ)
৩. ইমাম বাযদবী (রহঃ)
৪. ইমাম শাশী (রহঃ)
৫. ইবনে আমীর আলহাজ্ব (রহঃ)
যারা মালেকী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
---------------
১. ইবনুল হাজেব (রহঃ)
২. ক্বারাফী (রহঃ)
৩. ইবনুল আরাবী (রহঃ)
৪. ইমাম শাতবী (রহঃ)
যারা শাফেয়ী মাযহাবে অনুসরণ করেছেন-
------------------------------
১. ইমাম জুয়াইনি (রহঃ)
২. হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজালী (রহঃ)
৩. আল্লামা আ’মাদী (রহঃ)
৪. আল্লামা রাযী (রহঃ)
৫. আল্লামা শিরাযী (রহঃ)
৬. আল্লামা ইবনুস সুবকি (রহঃ)
৭. জালাল আলমাহাল্লী (রহঃ)
যারা হাম্বলী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
-----------------------------
১. ইবনে কুদামা (রহঃ)
২. ইবনুন নাজ্জার (রহঃ)
৩. আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ)
৪. ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)

রাজনৈতিক ও ভৌগলিকভাবে মাযহাবের অনুসরণ



আমরা যদি ইসলামের রাজা-বাদশা ও
বিশ্বজয়ীদের দিকে লক্ষ করি, তবে দেখা যাবে তাদের সকলেই কোন কোন মাযহাবের অনুসারী
ছিলেন।
যারা হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন-
-----------------------------
১. আব্বাসীয় খিলাফতকালে প্রায় ৫০০শ’ বছর যাবৎ
হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেন। তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে হানাফী মাযহাব পালিত হত।
ইবনু আব্দিল বার (রহঃ) লিখেছেন-
ইমাম আবু ইউসুফ রহ.(ইমাম আবু হানীফা রহ. এর
বিশিষ্ট ছাত্র) আব্বাসীয় খলিফা, মাহদী, হাদী
এবং হারুনুর রশিদের সময়ে সমগ্র খিলাফতের
কাযীউল কুযাত (প্রধান বিচারপতি ছিলেন) ২. উসমানী খলিফাগণ দীর্ঘ সাড়ে ছয় শ’ বছর যাবৎ
হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেছেন।
৩. ভারত উপমহাদেশের প্রায় সকল সম্রাটরাই
হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। গজনী,
মামলুক, খলজী, সৈয়দ, লোদী, তুঘলক, মুঘল সকলেই
হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।


১. পূর্ব থেকে এখনও পৃথিবীর যে সমস্ত অঞ্চলে হানাফী মাযহাব অনুসরণ করা হয়-

--------------------------------
সুদান, মিশর, জর্দান, সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক,
উজবেকিস্তান, আলবেনিয়া, কাজাখস্তান,
তাজিকিস্তান, কিরগিজিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, রাশিয়া, চীন, তুরষ্ক, বলকান, আজারবাইজান,
ইইক্রেন, শাম, ইণ্ডিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ,
আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, বসনিয়া,
হার্জেগোভিনা মারিশাছ লিভান্ট ইত্যাদি।


২. যে সমস্ত অঞ্চলে মালেকী মাযহাব অনুসরণ করা হয়-
-----------------------------
উত্তর আফ্রিকা, পশ্চিম আফ্রিকা, ইউনাইটেড আরব
আমীরাত, কুয়েত,সওদী আরবের কিছু অংশ, উমান,
লিবিয়া, নাইজেরিয়া, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া,
মরক্কো, পশ্চিম সাহারা, চাদ এবং মধ্যপ্রাচ্যের
বিভিন্ন রাষ্ট্রে মালেকী মাযহাব অনুসরণ করা হয়। ইউরোপে বিশেষভাবে স্পেনে মালেকী মাযহাবের
অনুসরণ করা হত।
৩. যে সমস্ত অঞ্চলে শাফেয়ী মাযহাব অনুসরণ করা হয়-
------------------------------
দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, উত্তরপূর্ব আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারত উপমহাদেশের কিছু অংশ।
৪. সওদী আরবে বিশেষভাবে হাম্বলী মাযহাব
অনুসরণ করা হয়ে থাকে।
আমরা এখানে যুগশ্রেষ্ঠ আলেমগণের যে সংখ্যা
উল্লেখ করেছি, এটি খুবই সামান্য। আলোচনা দীর্ঘ
হওয়ায় যুগশ্রেষ্ঠ অসংখ্য আলেমের নাম উল্লেখ করা হয়নি।



এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য মুহাদ্দিস,
মুফাসসির এবং ফকীহগণের জীবনীর উপর লেখা
গ্রন্থগুলো দেখা যেতে পারে। যেমন-


১. আল্লামা ইবনে খাল্লকািন (রহঃ) কর্তৃক রচিত
“ওফায়াতুল আ’য়ান”। 

২. মিশর ওযারাতুল আওকাফ থেকে প্রকাশিত
“মাউসুআতুল আ’লাম”।

৩. আল-জাওয়াহিরুল মুজিয়্যা ফি তাবাকাতিল
হানাফিয়্যা, আব্দুল কাদের বিন মুহাম্মাদ বিন
মুহাম্মাদ (রহঃ)

৪. তাবাকাতুল ফুকাহা, আবু ইসহাক শিরাযী (রহঃ)

৫. তবাকাতুল হানাবেলা, আল্লামা ইবনু আবি
ইয়ালা।

৬. আদ-দিবাজুল মাযহাব ফি মা’রিফাতি আ’য়ানি
উলামিল মাযহাব। মালেকী মাযহাবের উলামায়ে
কেরামের জীবনীর উপর রচিত।

৭. তবাকাতুল শাফেয়ীয়া আলকুবরা, আল্লামা তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ)


Tuesday, September 13, 2016

আল্লাহকে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই একমাত্র কুরবানী: তাৎপর্য পূর্ণ ফজিলত


 #আল্লাহকে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই একমাত্র কুরবানী: তাৎপর্য পূর্ণ ফজিলত..........





#কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের প্রয়াস মানুষের অতি প্রাচীন। কুরবানী ও উৎসর্গের রেওয়াজ আদী পিতা হযরত আদমের (আ:) যুগ থেকেই শুরু । তার দুই পুত্র হাবীল ও কাবীলের কুরবানীকেই বিশ্বের প্রথম কুরবানীর ঘটনা বলে চিহ্নিত করা হয়। বিষয়টি পবিত্র কুরআনের সূরা মায়েদায় বিস্তারিত এসেছে।এরপর থেকে দুনিয়ার সব কটি ধর্ম ও মতাদর্শে কুরবানীর ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায়।

আজ আমরা যে কুরবানীর উৎসব নিয়ে ব্যতিব্যস্ত তা প্রায় চার হাজার বছর আগের দুই মহান পয়গাম্বরের নজীরবিহীন আত্মত্যাগ সম্পর্কিত ঘটনার স্মারক। তারা হলেন, বিশ্বের তিন প্রধান ধর্মাবলম্বী ইহুদী, খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের আদি পুরুষ হযরত ইবরাহীম ও তার পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ:)।
যীশুখৃষ্ট (ঈসা আ:) এর প্রায় দুহাজার বছর পূর্বে ইরাকের প্রাচীনতম শহর ‘উর ’- এ জন্ম গ্রহণ করেন জগদ্বিখ্যাত নবী ইবরাহীম – (আনওয়ারে আম্বিয়া, ইফা)। রাজ পুরোহিত পরিবারে জন্ম নিয়েও তিনি ছিলেন খোদা লা- শারীকের এক অবিচল বিশ্বাসী বান্দা ও মজনু।প্রিয়জনকে আল্লাহ বেশী পরীক্ষায় ফেলেন। ইবরাহীমের জন্যও অনেক পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন তিনি। সব কটি পরীক্ষায় ইবরাহীম সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু একটি পরীক্ষা রয়ে যায়, যাতে উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইব্রাহীম খোদা তায়ালাকে দুনিয়ার সবকিছু অপেক্ষা ভালবাসেন কিনা তার প্রমাণ মিলতো না। তাই নির্দেশ হলো, বৃদ্ধ বয়সে তোমার যে ফুটফুটে সন্তান রয়েছে তাকে আমার নামে কুরবানী দাও…….।’

ইব্রাহীম সামান্যও কুন্ঠিত হলেন না। তিনি বলে উঠলেনঃ প্রভু! তোমার ইচ্ছেই পূর্ণ হোক। কিন্তু তিনি যাকে কুরবানী দেবেন তার মনের অভিপ্রায়ও জেনে নেয়া জরুরী মনে করলেন। ইসমাঈলকে তিনি পরম স্নেহে ডেকে নিয়ে বললেনঃ মানিক আমার! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি জবেহ করছি। এখন তোমার অভিমত কি বল? ইসমাঈল জানেন, তার পিতা একজন মহান পয়গাম্বর। তার কথা কখনো গুরুত্বহীন নয়, তার কথায় খোদা তায়ালার নির্দেশ ও সন্তুষ্টি নিহিত। তাই তিনি অতি দৃঢ়তার সাথে আরজ করলেনঃ ওহে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। ইনশা আল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভূক্ত পাবেন।- (সূরা সাফফাতঃ১০২)।
মায়ের বুক খালি করে সন্তানকে কুরবানীর জন্য নিয়ে চলেছেন নবী ইব্রাহীম। পিতা-পুত্রের এ নজীরবিহীন ত্যাগ ও কুরবানীর মনোভাব দেখে সকলে হতবাক। মিনা প্রান্তরের তপ্ত বালিতে শুইয়ে সন্তানের গলায় সুতীক্ষè ছুরি চালালেন তিনি।
পিতা পুত্র দু’জনই যখন চোখ বাঁধা! হঠাৎ গায়েবী আওয়াজ আসলো। থামো, হে ইব্রাহীম! যথেষ্ট হয়েছে। ক্বাদ সোয়াদ্দাক্তার রু-ইয়া নিশ্চয় তুমি তোমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দান করলে।’ তুমি উত্তীর্ণ হলে তোমার পরীক্ষায়!
এরপর ইব্রাহীম চোখ খুললেন পরম আত্মতৃপ্তিতে। কিন্তু এ’কি তিনি দেখছেন! ইসমাঈল তার পাশেই দাঁড়িয়ে এবং তার স্থলে জবেহ হয়ে আছে একটি বেহেস্তী দুম্বা। দু’জনেই আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় মুনাজাত করলেন।
দিনে দিনে এ অভাবিতপূর্ণ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লো বিভিন্ন স্থানে। যুগের পয়গাম্বরের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং আল্লাহ তায়ালার সšু‘ষ্টি লাভের মানসে অনেকে পশু কুরবানী শুরু করেন। যা আজো অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তীতে এ দুই মহান নবী খানায়ে কা’বা আবিষ্কার করেন- যা ফেরে¯তা এবং আদম (আ:) কর্তৃক বহু আগে নির্মিত হয়েছিল এবং নূহ নবী (অ:) এর আমলের বিখ্যাত প্লাবনে মাটি চাপা পড়ে গিয়েছিল। আল্লাহ পাক পবিত্র খানায়ে কা’বাকে মানুষের গুনাহ মাফি, শান্তি ও নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দু রূপে নির্ধারিত করলেন এবং ইবরাহীম -ইসমাঈলের অপরূপ জীবন কাহিনী , ত্যাগ ও দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রভূমি মক্কাকে চির মর্যাদাকর করে রাখলেন হজ্জের অনুষ্ঠানমালা প্রবর্তনের মাধ্যমে। ঈদুল আযহা তারই প্রেক্ষাপটে গোটা উম্মাহর স্মরণ উৎসব।
হজ্জ ও কুরবানীর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির তুলনায় দুুনিয়ার পাওনাকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে শেখে। এর মাধ্যমে আল্লাহতে অবিচল অবস্থার সৃষ্টি হয়্য। তার জন্য জান মাল যে কোন কিছু উৎসর্গ করতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়। হজ্জ ও কুরবানী মিল্লাতের পিতা ইব্রাহীমের (আ:) আদর্শ ও শিক্ষায় তাওহীদবাদী মুসলমানদের উজ্জীবিত করে। এতে প্রতিবছর তারা ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে এবং ঐতিহ্যকে আকড়ে থাকার শপথবদ্ধ হয়।
হজ্জ ও কুরবানী অনুষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা বর্ণ ও ভাষার মুসলিম জাতিকে এক অভিন্ন সংস্কৃতির শিক্ষা দিয়ে থাকে। এর ফলে পরস্পরের মধ্যে মত বিনিময়ের মাধ্যমে তারা বিকৃতি ও আকীদাগত বিভ্রান্তি দূর করতে পার্।ে ঈদুল আযহা মুসলমাদের কাছে উন্মোচিত করে একজন সন্তানের প্রতি একজন পিতার স্নেহ ভালবাসা ও অধিকারের বিষয়; একইভাবে একজন যোগ্য সন্তান কি পরিমাণ আনুগত্যের পরাকাষ্টা দেখাতে পারে পিতা মাতা ময়মুরুব্বীদের উদ্দেশ্যে।

পবিত্র হজ্জের মিলনমেলা এবং ঈদুল আযহার অন্তর্নিহিত দর্শন আমাদের সকলকে আল্লাহর হুকুম আহকাম পালনে, সত্য ও ন্যায়ের জন্য আত্মোৎসর্গে এবং সাম্য মৈত্রী আধ্যাত্মিকতায় অনুপ্রাণিত করুক এ কামনা আজকে। আমাদের দেশে ঈদের একটি সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার বিষয় আছে। এখানে মুসলিম জাতির পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্যান্য কিছু জাতি বসবাস করে। তাদের সামনে আমাদেরকে ঈদের মাহাত্ম্য আন্তরিকতার সাথে তুলে ধরতে হবে। এমন কোন আচরণ এ সময় প্রদর্শন করা উচিত নয়, যা আমাদের ধমর্, আমাদের ঈদ ও ইবাদত পর্ব নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।

যেমন কুরবানীর পশুর বাজারের নামে যত্রতত্র রাস্তাঘাট দখল করা, ময়লা আবর্জনায় সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস তোলা। কুরবানীর পরবর্তীতেও আমরা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা ভুলে যাই । যত্রতত্র মলমূত্র হাঁড়, উচ্ছিষ্ট, রক্ত গন্ধ আমাদের সমাজে স্বাভাবিক বসবাস যোগ্যতা বিঘ্নিত করে। যা কারো জন্য শোভনীয় নয়। এ বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দিলে সত্যিকার অর্থে ঈদ আনন্দের, ঈদ উপভোগের, ঈদ শিক্ষা ও সামাজিক মজবুত বন্ধনের। আর পবিত্র ঈদুল আযহা ত্যাগের মহিমায় চির ভাস্বর হয়ে আছে আমাদের মাঝে।

বি:দ্র: - আরোও কিছু লেখার ছিল................ আর একদিন বলা যাবে। ইনশা আল্লাহ।

Friday, August 19, 2016

হজযাত্রা: কী করবেন, কীভাবে করবেন তার সকল ইনফর্মেশন দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র।



হজযাত্রা: কী করবেন, কীভাবে করবেন



জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই।
সম্পর্কে পরিচালক হজ . আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানালেন, এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ, হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। হজের প্রশিক্ষণও নিতে হবে। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। ছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিতদের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানতে পারেন। আর হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া যাবে।
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করুন—‘হে আল্লাহ! আমার হজকে সহজ করো, কবুল করো’—দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না
হজে যাওয়ার আগে
পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম মেনে ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে নিন। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন।প্রথম আলো হজ গাইডচাইলে সংগ্রহ করতে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা অন্য হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। পরিচিত অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন
মানসিক প্রস্তুতি জরুরি
হজ করতে যাচ্ছেনযাত্রার শুরুতে নিজেকে এমনভাবে মানসিকভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ হলো দৈহিক আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ নিজের মালপত্র নিজেকেই বহন করতে হবে। সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দলের (গ্রুপের) দুর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ কাবা শরিফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন। যাত্রার শুরুতে ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনি হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন; সেখানকার মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে, রাস্তাঘাট অচেনা। হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য সৌদি আরব বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। যেমন: . বিমানের টিকিট, ডলার কেনা, . পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ, . পুরুষের জন্য ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ এক টুকরা কাপড়। ইহরামের কাপড় সাদা, সুতি হলে ভালো হয়) আর নারীদের জন্য সেলাইযুক্ত স্বাভাবিক পোশাকই ইহরামের কাপড় . নরম ফিতাওয়ালা স্যান্ডেল, . ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট), . গামছা, তোয়ালে, . লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি (আপনি যে পোশাক পরবেন), . সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক, . নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা, ১০. থালা, বাটি, গ্লাস, ১১. হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক, ১২. কাগজ-কলম, ১৩. শীতের কাপড় (মদিনায় ঠান্ডা পড়ে), ১৪. প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য), ১৫. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য), ১৬. নারীদের জন্য বোরকা, ১৭. যত দিন বিদেশে থাকবেন, সেই অনুযায়ী নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওষুধ নেবেন, ১৮. মোবাইল সেট (সৌদি আরবে ব্যবহার করা যায়, তেমন সিম কিনে নিতে হবে) ১৯. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা স্যুটকেস (তালা-চাবিসহ) নিতে হবে। ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর লিখতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিতে হবে।
ঢাকার আশকোনায় অবস্থিত হাজ ক্যাম্পে টিকা দেওয়া, হজের প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক মুদ্রা কেনাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পাওয়া যায়
ঢাকার হাজ ক্যাম্প
বিমানে যাত্রার আগে হাজ ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন।
*
কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন
ব্যাগেজ নিয়মকানুন
বিমানে উড্ডয়নকালে হাত ব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোনো হজযাত্রী সর্বোচ্চ ৩০ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত কোনো ওষুধ নিতে পারবেন না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেমন: রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া যাবে না
জরুরি কাগজপত্র
১০ কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, স্ট্যাম্প আকারের কপি ছবি, পাসপোর্টের - পাতার সত্যায়িত ফটোকপি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, টিকা কার্ড। নারী হজযাত্রীর ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত মাহরামের সঙ্গে সম্পর্কের সনদ, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। প্রত্যেক হজযাত্রীর সংখ্যার একটি পরিচিতি নম্বর থাকে। এর প্রথম সংখ্যা এজেন্সির নম্বর আর শেষ সংখ্যা হজযাত্রীর পরিচিতি নম্বর। এই নম্বরটি জানা থাকলে হজযাত্রী তাঁর আত্মীয়স্বজন ওয়েবসাইটে ওই হাজির তথ্য পেতে পারেন সহজে। বাড়তি সতর্কতার জন্য নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরসহ ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে রাখুন। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বাসস্থানের বাইরে গেলে হজযাত্রীকে পরিচয়পত্র, মোয়াল্লেম কার্ড হোটেলের কার্ড অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে
ইহরাম
আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম বাঁধতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায় যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেইমিকাতবা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে। ইহরাম গ্রহণের পর সাংসারিক কাজকর্ম নিষেধযেমন সহবাস করা যাবে না, পুরুষদের জন্য কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়, কথা কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না, কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না, কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না, ক্ষতিকারক সকল প্রাণী মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না
ঢাকা বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মালপত্র দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মালপত্র রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
*
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন
জেদ্দা বিমানবন্দর
বিমান থেকে নামার পর দেখবেন, একটি হলঘরে বসার ব্যবস্থা করা আছে। অবতরণ কার্ড, হেলথ কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র বের করুন। এই হলঘরের পাশেই ইমিগ্রেশন কাউন্টার। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা দেখে (ছবি আঙুলের ছাপ নিয়ে) পাসপোর্টের নির্দিষ্ট পাতায় সিল দেবেন। বিমানের বেল্টে মালামাল খুঁজে নিরাপত্তা-তল্লাশির জন্য মালামাল দিন। তারপর মোয়াল্লেমের কাউন্টার। সৌদি আরবে বিমানবন্দরে নামার পর থেকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে হাজিদের মক্কা-মদিনায় পৌঁছানো, মক্কা-মদিনায় আবাসন, মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতে থাকা-খাওয়া, যাতায়াতসহ সবকিছুর ব্যবস্থা যাঁরা করেন, তাঁদের বলা হয় মোয়াল্লেম। সৌদি আরবের নাগরিকেরাই হতে পারেন মোয়াল্লেম। প্রত্যেক মোয়াল্লেমের নির্দিষ্ট নম্বর আছে। মোয়াল্লেমের কাউন্টার থেকে মিলিয়ে নেবেন তার অধীন কোন কোন হাজি সৌদি আরবে এসে পৌঁছেছেন।
*
লাল-সবুজ পতাকা অনুসরণ করেবাংলাদেশ প্লাজায়পৌঁছাবেন। হজ টার্মিনাল শুধু হজযাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। শুধু হজের সময় (জিলকদ, জিলহজ মহররম মাসে) এটি চালু থাকে। বছরের বাকি সময় বন্ধ থাকে। বিমানবন্দর টার্মিনালের চারদিক খোলা। ঐতিহ্যবাহী তাঁবুর নকশায় করা ছাদ। এই হজ টার্মিনালের স্থপতি কিন্তু বাংলাদেশি। নাম ফজলুর রহমান খান, যিনি এফ আর খান নামে পরিচিত
হজ টার্মিনাল
হজ টার্মিনালেরবাংলাদেশ প্লাজায়গিয়ে অপেক্ষা করুন। অপেক্ষা দীর্ঘ হতে পারে, ধৈর্য হারাবেন না। সেখানে অজু করা, নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বসার জন্য চেয়ারও রয়েছে। প্রতি ৪৫ জনের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা। মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া হবে আপনাকে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন।
জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...)

 
মক্কায় পৌঁছানোর পর
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহর নিয়ত করে থাকলে ওমরাহ পালন করুন।
*
মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেক প্রবেশপথ আছে। সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ইংরেজিতে , , নম্বর প্রবেশপথের নাম আছে, যেমনবাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
*
কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখার জায়গায় রাখুন। যেখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন। চাইলে জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন।
*
কাবা ঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে: হাজরে আসওয়াদ, রকনে ইরাকি, রকনে শামি রকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রকনে ইরাকি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত হাতিম) তারপর যথাক্রমে রকনে শামি রকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়।
*
ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন: সাতবার তওয়াফ করা, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানোযদিও মসৃণ পথ এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত), মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে, যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা
ওমরাহ
হিল (কাবা শরিফের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে ওমরাহ বলে।
*
হজ তিন প্রকারতামাত্তু, কিরান ইফরাদ। হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, ওমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
*
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ হজ করাকে হজে কিরান বলে। আর শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে
আরও কিছু পরামর্শ
*
সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হতে হবে। কখনো দৌড়ে রাস্তা পারাপার হবেন না।
*
কাবা শরিফ মসজিদে নবিবর ভেতরে কিছুদূর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে। আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
*
কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
*
হজযাত্রীদের তথ্য, হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে।
*
মিনার ম্যাপ থাকলে হারানোর ভয় নেই। মিনার কিছু অবস্থান চিনে নিজের মতো করে আয়ত্তে আনলে এখানে চলাচল করা সহজ হয়। যেমন জামারা (শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান), মসজিদে খায়েফ, মিনায় তিনটি ব্রিজকিং খালেদ ব্রিজ ১৫ নম্বর, বাদশাহ আবদুল্লাহ ব্রিজ ২৫ নম্বর, বাদশাহ ফয়সাল ব্রিজ ৩৫ নম্বর। হাঁটার পথ (টিনশেড নামে পরিচিত) এখানে সাতটি জোন রয়েছে। মিনার বড় রাস্তাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম নম্বর রয়েছে।
*
রাস্তার নাম নম্বর জানা থাকলে মিনায় চলাচল সহজ হয়। পথ হারানোর সুযোগ কম থাকে। বড় রাস্তাগুলো হলো: কিং ফয়সাল রোড ৫০ নম্বর রাস্তা, আলজাওহারাত রোড ৫৬ নম্বর রাস্তা, সুক্কল আরব রোড ৬২ নম্বর রাস্তা, কিং ফাহাদ রোড ৬৮ নম্বর রাস্তা। মিনায় রেলস্টেশন ৩টি। মুজদালিফায় রেলস্টেশন ৩টি। ছাড়া রয়েছে সুড়ঙ্গপথ, টানেল, পায়ে চলার রাস্তা, হাসপাতাল, মসজিদ, পোস্ট অফিস, মিনার বাদশাহ বাড়ি, রয়েল গেস্টহাউস (রাজকীয় অতিথি ভবন) মোয়াচ্ছাসা কার্যালয়।
*
ছাপানো অথবা ইন্টারনেটে মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাতের মানচিত্র পাওয়া যায়। সম্ভব হলে মানচিত্র দেখুন তাহলে ওখানকার রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
*
হাজিদের একটি অংশ নিজে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেয়। অন্য অংশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) মাধ্যমে কোরবানি দেয়। আইডিবির কুপন কিনে কোরবানি দেওয়া সৌদি সরকারের স্বীকৃত ব্যবস্থা
*
মনে রাখবেন, মসজিদে নবিব মসজিদুল হারামের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
*
হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই মুখ ঢেকে নিতে হবে। শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন।
*
কোনো কোনো হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় নয় কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
*
মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য বিবেচিত হন না; নারী হজযাত্রীকে মাহরামের সঙ্গে একত্রে টাকা জমা দিতে হয়।
*
মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় মসজিদে নবিব থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থা কাবা শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও তত কম হবে।
*
হজের সময় হজযাত্রীদের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়, আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজ (হজ মন্ত্রণালয়) বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
*
মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।
*
মিনায় মোয়াল্লেম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়। তা যত্নে রাখতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময়ও কার্ডটি সঙ্গে রাখুন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেই তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।
*
মিনায় জামারা থেকে আপনার তাঁবুর অবস্থান, তাঁবু থেকে মসজিদুল হারামে যাওয়া-আসার পথ সম্পর্কে ধারণা নিন। ভিড় এড়াতে কেউ কেউ হেঁটে সুড়ঙ্গ (টানেলের) পথ দিয়ে মসজিদুল হারামে পৌঁছান। হাঁটার পথ চিনতে স্থানীয় (কোনো বাংলাদেশিকে বললে দেখিয়ে দেবেন) বা গুগল ম্যাপের সহায়তা নিতে পারেন।
*
অনেকে ট্যাবলেট বা আইফোন নিয়ে যান। রাস্তাঘাট, অবস্থান ইত্যাদি জানতে হজ পিলগ্রিম অ্যাপসের সহায়তা নিতে পারেন।
*
আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়। তাই ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
*
মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি ব্যবহার করতে পারেন। মক্কাসহ বিভিন্ন জায়গায় পাটি কিনতে পাওয়া যায়।
*
মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।
*
মিনায় কোনো সমস্যা হলে বাংলাদেশ হজ মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।
*
হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়ে পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে। তবে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ব্যাপারে হজযাত্রীদের সচেতন থাকতে হবে। অনেক বাংলাদেশি হজযাত্রী হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজের আহকাম বা নিয়মকানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।
*
মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডালসব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে একজনের খাবার কিনলে বাড়িতে বসে অনায়াসে দুজন খেতে পারেন।
*
মক্কা-মদিনায় প্রচুর ফলমূল ফলের রস পাওয়া যায়। এগুলো কিনে খেতে পারেন।
*
মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন।
*
হজের সময় প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, পকেটে টাকা থাকলেও যানবাহন পাওয়া যায় না।
*
মক্কায় ঐতিহাসিক স্থান হেরা গুহা, সওর পর্বত, মিনায় আল-খায়েফ মসজিদ, নামিরা মসজিদ, আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফা, জামারা (শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছোড়ার স্থান) জান্নাতুল মাআলা (কবরস্থান), মসজিদে জিন, মক্কা জাদুঘর, গিলাফ তৈরির কারখানা, লাইব্রেির। মদিনায় মসজিদে নববি, জান্নাতুল বাকি (কবরস্থান), ওহুদ পাহাড়, খন্দক, মসজিদে কুবা, মসজিদে কেবলাইতাইন, মসজিদে জুমআ, মসজিদে গামামাহ, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাদশাহ ফাহাদ কোরআন শরিফ প্রিন্টিং কমপ্লেক্স ঘুরে আসতে পারেন
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে নির্দিষ্ট কাজ করা। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ হলো পবিত্র হজ।
একনজরে হজের কার্যক্রম
ইহরাম বাঁধা - জিলহজ মিনায় অবস্থান জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান এবং সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া
জিলহজ মুজদালিফায় রাতযাপন ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা, কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ করা ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা বিদায়ী তাওয়াফ
সূত্র: হজ মন্ত্রণালয়, সৌদি আরব
টিকা দেওয়া
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, সেখান থেকে করতে পারবেন।
মাধ্যম
এজেন্সি বা যে মাধ্যমে হজের টাকা জমা দিয়েছেন, তা জমা হয়েছে কি না, যাচাই করুন। www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইটে নিজের নাম-ঠিকানা ঠিক আছে কি না দেখুন।
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা এখন থেকেই শুরু করুন। আপনার মালপত্র হালকা রাখুন। কারণ, আপনাকেই তা বহন করতে হবে।
নিয়মকানুন
হজের নিয়মকানুন জানতে প্রয়োজনীয় বইপুস্তক পড়ুন।
প্রথম আলো হজ গাইড সংগ্রহ করতে পারবেন হজ ক্যাম্প অথবা প্রথম আলো কার্যালয় থেকে।
তালবিয়া
লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়াল্মুলক, লা শারিকা লাকা।