Translate

Friday, August 19, 2016

হজযাত্রা: কী করবেন, কীভাবে করবেন তার সকল ইনফর্মেশন দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র।



হজযাত্রা: কী করবেন, কীভাবে করবেন



জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই।
সম্পর্কে পরিচালক হজ . আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানালেন, এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ, হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। হজের প্রশিক্ষণও নিতে হবে। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। ছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিতদের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানতে পারেন। আর হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া যাবে।
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করুন—‘হে আল্লাহ! আমার হজকে সহজ করো, কবুল করো’—দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না
হজে যাওয়ার আগে
পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম মেনে ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে নিন। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন।প্রথম আলো হজ গাইডচাইলে সংগ্রহ করতে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা অন্য হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। পরিচিত অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন
মানসিক প্রস্তুতি জরুরি
হজ করতে যাচ্ছেনযাত্রার শুরুতে নিজেকে এমনভাবে মানসিকভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ হলো দৈহিক আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ নিজের মালপত্র নিজেকেই বহন করতে হবে। সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দলের (গ্রুপের) দুর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ কাবা শরিফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন। যাত্রার শুরুতে ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনি হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন; সেখানকার মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে, রাস্তাঘাট অচেনা। হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য সৌদি আরব বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। যেমন: . বিমানের টিকিট, ডলার কেনা, . পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ, . পুরুষের জন্য ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ এক টুকরা কাপড়। ইহরামের কাপড় সাদা, সুতি হলে ভালো হয়) আর নারীদের জন্য সেলাইযুক্ত স্বাভাবিক পোশাকই ইহরামের কাপড় . নরম ফিতাওয়ালা স্যান্ডেল, . ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট), . গামছা, তোয়ালে, . লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি (আপনি যে পোশাক পরবেন), . সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক, . নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা, ১০. থালা, বাটি, গ্লাস, ১১. হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক, ১২. কাগজ-কলম, ১৩. শীতের কাপড় (মদিনায় ঠান্ডা পড়ে), ১৪. প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য), ১৫. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য), ১৬. নারীদের জন্য বোরকা, ১৭. যত দিন বিদেশে থাকবেন, সেই অনুযায়ী নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওষুধ নেবেন, ১৮. মোবাইল সেট (সৌদি আরবে ব্যবহার করা যায়, তেমন সিম কিনে নিতে হবে) ১৯. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা স্যুটকেস (তালা-চাবিসহ) নিতে হবে। ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর লিখতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিতে হবে।
ঢাকার আশকোনায় অবস্থিত হাজ ক্যাম্পে টিকা দেওয়া, হজের প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক মুদ্রা কেনাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পাওয়া যায়
ঢাকার হাজ ক্যাম্প
বিমানে যাত্রার আগে হাজ ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন।
*
কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন
ব্যাগেজ নিয়মকানুন
বিমানে উড্ডয়নকালে হাত ব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোনো হজযাত্রী সর্বোচ্চ ৩০ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত কোনো ওষুধ নিতে পারবেন না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেমন: রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া যাবে না
জরুরি কাগজপত্র
১০ কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, স্ট্যাম্প আকারের কপি ছবি, পাসপোর্টের - পাতার সত্যায়িত ফটোকপি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, টিকা কার্ড। নারী হজযাত্রীর ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত মাহরামের সঙ্গে সম্পর্কের সনদ, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। প্রত্যেক হজযাত্রীর সংখ্যার একটি পরিচিতি নম্বর থাকে। এর প্রথম সংখ্যা এজেন্সির নম্বর আর শেষ সংখ্যা হজযাত্রীর পরিচিতি নম্বর। এই নম্বরটি জানা থাকলে হজযাত্রী তাঁর আত্মীয়স্বজন ওয়েবসাইটে ওই হাজির তথ্য পেতে পারেন সহজে। বাড়তি সতর্কতার জন্য নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরসহ ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে রাখুন। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বাসস্থানের বাইরে গেলে হজযাত্রীকে পরিচয়পত্র, মোয়াল্লেম কার্ড হোটেলের কার্ড অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে
ইহরাম
আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম বাঁধতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায় যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেইমিকাতবা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে। ইহরাম গ্রহণের পর সাংসারিক কাজকর্ম নিষেধযেমন সহবাস করা যাবে না, পুরুষদের জন্য কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়, কথা কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না, কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না, কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না, ক্ষতিকারক সকল প্রাণী মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না
ঢাকা বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মালপত্র দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মালপত্র রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
*
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন
জেদ্দা বিমানবন্দর
বিমান থেকে নামার পর দেখবেন, একটি হলঘরে বসার ব্যবস্থা করা আছে। অবতরণ কার্ড, হেলথ কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র বের করুন। এই হলঘরের পাশেই ইমিগ্রেশন কাউন্টার। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা দেখে (ছবি আঙুলের ছাপ নিয়ে) পাসপোর্টের নির্দিষ্ট পাতায় সিল দেবেন। বিমানের বেল্টে মালামাল খুঁজে নিরাপত্তা-তল্লাশির জন্য মালামাল দিন। তারপর মোয়াল্লেমের কাউন্টার। সৌদি আরবে বিমানবন্দরে নামার পর থেকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে হাজিদের মক্কা-মদিনায় পৌঁছানো, মক্কা-মদিনায় আবাসন, মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতে থাকা-খাওয়া, যাতায়াতসহ সবকিছুর ব্যবস্থা যাঁরা করেন, তাঁদের বলা হয় মোয়াল্লেম। সৌদি আরবের নাগরিকেরাই হতে পারেন মোয়াল্লেম। প্রত্যেক মোয়াল্লেমের নির্দিষ্ট নম্বর আছে। মোয়াল্লেমের কাউন্টার থেকে মিলিয়ে নেবেন তার অধীন কোন কোন হাজি সৌদি আরবে এসে পৌঁছেছেন।
*
লাল-সবুজ পতাকা অনুসরণ করেবাংলাদেশ প্লাজায়পৌঁছাবেন। হজ টার্মিনাল শুধু হজযাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। শুধু হজের সময় (জিলকদ, জিলহজ মহররম মাসে) এটি চালু থাকে। বছরের বাকি সময় বন্ধ থাকে। বিমানবন্দর টার্মিনালের চারদিক খোলা। ঐতিহ্যবাহী তাঁবুর নকশায় করা ছাদ। এই হজ টার্মিনালের স্থপতি কিন্তু বাংলাদেশি। নাম ফজলুর রহমান খান, যিনি এফ আর খান নামে পরিচিত
হজ টার্মিনাল
হজ টার্মিনালেরবাংলাদেশ প্লাজায়গিয়ে অপেক্ষা করুন। অপেক্ষা দীর্ঘ হতে পারে, ধৈর্য হারাবেন না। সেখানে অজু করা, নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বসার জন্য চেয়ারও রয়েছে। প্রতি ৪৫ জনের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা। মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া হবে আপনাকে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন।
জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...)

 
মক্কায় পৌঁছানোর পর
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহর নিয়ত করে থাকলে ওমরাহ পালন করুন।
*
মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেক প্রবেশপথ আছে। সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ইংরেজিতে , , নম্বর প্রবেশপথের নাম আছে, যেমনবাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
*
কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখার জায়গায় রাখুন। যেখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন। চাইলে জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন।
*
কাবা ঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে: হাজরে আসওয়াদ, রকনে ইরাকি, রকনে শামি রকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রকনে ইরাকি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত হাতিম) তারপর যথাক্রমে রকনে শামি রকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়।
*
ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন: সাতবার তওয়াফ করা, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানোযদিও মসৃণ পথ এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত), মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে, যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা
ওমরাহ
হিল (কাবা শরিফের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে ওমরাহ বলে।
*
হজ তিন প্রকারতামাত্তু, কিরান ইফরাদ। হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, ওমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
*
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ হজ করাকে হজে কিরান বলে। আর শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে
আরও কিছু পরামর্শ
*
সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হতে হবে। কখনো দৌড়ে রাস্তা পারাপার হবেন না।
*
কাবা শরিফ মসজিদে নবিবর ভেতরে কিছুদূর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে। আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
*
কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
*
হজযাত্রীদের তথ্য, হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে।
*
মিনার ম্যাপ থাকলে হারানোর ভয় নেই। মিনার কিছু অবস্থান চিনে নিজের মতো করে আয়ত্তে আনলে এখানে চলাচল করা সহজ হয়। যেমন জামারা (শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান), মসজিদে খায়েফ, মিনায় তিনটি ব্রিজকিং খালেদ ব্রিজ ১৫ নম্বর, বাদশাহ আবদুল্লাহ ব্রিজ ২৫ নম্বর, বাদশাহ ফয়সাল ব্রিজ ৩৫ নম্বর। হাঁটার পথ (টিনশেড নামে পরিচিত) এখানে সাতটি জোন রয়েছে। মিনার বড় রাস্তাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম নম্বর রয়েছে।
*
রাস্তার নাম নম্বর জানা থাকলে মিনায় চলাচল সহজ হয়। পথ হারানোর সুযোগ কম থাকে। বড় রাস্তাগুলো হলো: কিং ফয়সাল রোড ৫০ নম্বর রাস্তা, আলজাওহারাত রোড ৫৬ নম্বর রাস্তা, সুক্কল আরব রোড ৬২ নম্বর রাস্তা, কিং ফাহাদ রোড ৬৮ নম্বর রাস্তা। মিনায় রেলস্টেশন ৩টি। মুজদালিফায় রেলস্টেশন ৩টি। ছাড়া রয়েছে সুড়ঙ্গপথ, টানেল, পায়ে চলার রাস্তা, হাসপাতাল, মসজিদ, পোস্ট অফিস, মিনার বাদশাহ বাড়ি, রয়েল গেস্টহাউস (রাজকীয় অতিথি ভবন) মোয়াচ্ছাসা কার্যালয়।
*
ছাপানো অথবা ইন্টারনেটে মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাতের মানচিত্র পাওয়া যায়। সম্ভব হলে মানচিত্র দেখুন তাহলে ওখানকার রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
*
হাজিদের একটি অংশ নিজে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেয়। অন্য অংশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) মাধ্যমে কোরবানি দেয়। আইডিবির কুপন কিনে কোরবানি দেওয়া সৌদি সরকারের স্বীকৃত ব্যবস্থা
*
মনে রাখবেন, মসজিদে নবিব মসজিদুল হারামের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
*
হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই মুখ ঢেকে নিতে হবে। শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন।
*
কোনো কোনো হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় নয় কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
*
মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য বিবেচিত হন না; নারী হজযাত্রীকে মাহরামের সঙ্গে একত্রে টাকা জমা দিতে হয়।
*
মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় মসজিদে নবিব থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থা কাবা শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও তত কম হবে।
*
হজের সময় হজযাত্রীদের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়, আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজ (হজ মন্ত্রণালয়) বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
*
মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।
*
মিনায় মোয়াল্লেম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়। তা যত্নে রাখতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময়ও কার্ডটি সঙ্গে রাখুন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেই তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।
*
মিনায় জামারা থেকে আপনার তাঁবুর অবস্থান, তাঁবু থেকে মসজিদুল হারামে যাওয়া-আসার পথ সম্পর্কে ধারণা নিন। ভিড় এড়াতে কেউ কেউ হেঁটে সুড়ঙ্গ (টানেলের) পথ দিয়ে মসজিদুল হারামে পৌঁছান। হাঁটার পথ চিনতে স্থানীয় (কোনো বাংলাদেশিকে বললে দেখিয়ে দেবেন) বা গুগল ম্যাপের সহায়তা নিতে পারেন।
*
অনেকে ট্যাবলেট বা আইফোন নিয়ে যান। রাস্তাঘাট, অবস্থান ইত্যাদি জানতে হজ পিলগ্রিম অ্যাপসের সহায়তা নিতে পারেন।
*
আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়। তাই ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
*
মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি ব্যবহার করতে পারেন। মক্কাসহ বিভিন্ন জায়গায় পাটি কিনতে পাওয়া যায়।
*
মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।
*
মিনায় কোনো সমস্যা হলে বাংলাদেশ হজ মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।
*
হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়ে পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে। তবে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ব্যাপারে হজযাত্রীদের সচেতন থাকতে হবে। অনেক বাংলাদেশি হজযাত্রী হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজের আহকাম বা নিয়মকানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।
*
মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডালসব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে একজনের খাবার কিনলে বাড়িতে বসে অনায়াসে দুজন খেতে পারেন।
*
মক্কা-মদিনায় প্রচুর ফলমূল ফলের রস পাওয়া যায়। এগুলো কিনে খেতে পারেন।
*
মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন।
*
হজের সময় প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, পকেটে টাকা থাকলেও যানবাহন পাওয়া যায় না।
*
মক্কায় ঐতিহাসিক স্থান হেরা গুহা, সওর পর্বত, মিনায় আল-খায়েফ মসজিদ, নামিরা মসজিদ, আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফা, জামারা (শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছোড়ার স্থান) জান্নাতুল মাআলা (কবরস্থান), মসজিদে জিন, মক্কা জাদুঘর, গিলাফ তৈরির কারখানা, লাইব্রেির। মদিনায় মসজিদে নববি, জান্নাতুল বাকি (কবরস্থান), ওহুদ পাহাড়, খন্দক, মসজিদে কুবা, মসজিদে কেবলাইতাইন, মসজিদে জুমআ, মসজিদে গামামাহ, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাদশাহ ফাহাদ কোরআন শরিফ প্রিন্টিং কমপ্লেক্স ঘুরে আসতে পারেন
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে নির্দিষ্ট কাজ করা। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ হলো পবিত্র হজ।
একনজরে হজের কার্যক্রম
ইহরাম বাঁধা - জিলহজ মিনায় অবস্থান জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান এবং সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া
জিলহজ মুজদালিফায় রাতযাপন ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা, কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ করা ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা বিদায়ী তাওয়াফ
সূত্র: হজ মন্ত্রণালয়, সৌদি আরব
টিকা দেওয়া
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, সেখান থেকে করতে পারবেন।
মাধ্যম
এজেন্সি বা যে মাধ্যমে হজের টাকা জমা দিয়েছেন, তা জমা হয়েছে কি না, যাচাই করুন। www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইটে নিজের নাম-ঠিকানা ঠিক আছে কি না দেখুন।
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা এখন থেকেই শুরু করুন। আপনার মালপত্র হালকা রাখুন। কারণ, আপনাকেই তা বহন করতে হবে।
নিয়মকানুন
হজের নিয়মকানুন জানতে প্রয়োজনীয় বইপুস্তক পড়ুন।
প্রথম আলো হজ গাইড সংগ্রহ করতে পারবেন হজ ক্যাম্প অথবা প্রথম আলো কার্যালয় থেকে।
তালবিয়া
লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়াল্মুলক, লা শারিকা লাকা।

Saturday, July 9, 2016

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও বহুল আলোচিত ১০টি মসজিদ! যাদের সৌন্দর্যে আপনি বিমোহিত হয়ে যাবেন।

#মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র স্থান হচ্ছে মসজিদ। বিশ্বজুড়েই অসাধারণ স্থাপত্যের এমন অনেক সুন্দর মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা যত দূরেই গেছে, সেখানেই স্থাপন করা হয়েছে মসজিদ। সে হিসেবে ইতিহাসে মুসলমানদের শক্তির নমুনাও প্রমাণ করে মসজিদ। প্রায় ১৩০০ বছর ইউরোপ ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক অঞ্চল ছিল ইসলামের ছায়ায়। ইসলামী শাসন ক্ষমতা হারালেও মসজিদ হয়ে আছে গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর সেসব মসজিদ পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো— চলুন বন্ধুরা তাহলে দেখে আসি সেই সব জানা-অজানা, দেখা-অদেখা মসজিদ সমূহ---------------

১. মসজিদ আল হারাম (মক্কা, সৌদি আরব)
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহকে প্রার্থনার জন্য প্রথম ঘরটি হচ্ছে কাবা শরিফ। মসজিদ আল হারাম সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ এটি। ৪ লাখ ৮শ’ স্কয়ার ফিট সম্পন্ন মসজিদটি। হজের সময় এক সঙ্গে ৪০ লাখ মানুষ থাকতে পারে।

২. মসজিদ আল নববী (মদিনা, সৌদি আরব)
মসজিদ আল নববীকে প্রায় ডাকা হয় রাসূলের মসজিদ নামে। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মুসলমানদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। এটা মুসলমানদের জন্য দ্বিতীয় পবিত্র স্থান। সবুজ ডোমটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। কারণ এখানেই শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে সমাহিত করা হয়েছে। ১৮৩৭ সালে প্রথম এই গুম্বজটিতে সবুজ রং ব্যবহার করা হয়।
 
৩. আল আকসা মসজিদ (জেরুজালেম, ফিলিস্তিন)
আল আকসার আরেকটি নাম বায়তুল মোকাদ্দেস। মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান এটি। মুসলমানদের প্রথম কিবলা ছিল এই মসজিদটি। আল্লাহ পরবর্তীতে কাবাকে কিবলা নির্ধারণ করে দেন।



৪. হাসান দ্বিতীয় (মরক্কো)
মরক্কোতে অবস্থিত হাসান দ্বিতীয় মসজিদটি পৃথিবীর অন্যতম বড় (৭ম) একটি মসজিদ। এই মসজিদের মিনারটি ৬৮৯ ফুট লম্বা। ১৯৯৩ সালে মসজিদটি তৈরি শেষ হয়। মিনারটি প্রায় ৬০ তলা উঁচু এবং মাথায় লেজার লাগানো আছে।


৫. সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ (ব্রুনাই)
ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদটি ব্রুনাইয়ের রাজকীয় মসজিদ। মসজিদটিকে ধরা হয় এশিয়া অঞ্চলের অন্যতম সুন্দর মসজিদ হিসেবে। ১৯৫৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নানাভাবে সাজানো হয়েছে মসজিদটিকে।


. জহির মসজিদ(কেদাহ,মালয়েশিয়া)
মালয়েশিয়ার কেদাহ প্রদেশে অবস্থিত জহির মসজিদটি। মালয়েশিয়ার অন্যতম পুরাতন মসজিদ এটি। ১৯১২ সালে মসজিদটি সুলতান তাজউদ্দিন মুকারম শাহের ছেলে টুংকু মাহমুদ তৈরি করেছিলেন। মসজিদের ৫টি গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে ইসলামের ৫টি ভিত্তির ধারণায়।


. ফয়সাল মসজিদ (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের সবচেয়ে বড় মসজিদ এটি। পৃথিবীর ৪র্থ বৃহৎ মসজিদও এটি। ১৯৮৬-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এই মসজিদটি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল।


. তাজ উল মসজিদ (ভারত)
তাজ উল মসজিদ অর্থ হচ্ছে মসজিদের মুকুট। এই মসজিদটি ভারতের ভুপালে অবস্থিত। মসজিদটি ইসলাম শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় এখনো। এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সুন্দর ও বড় মসজিদ এটি।


. বাদশাহি মসজিদ (লাহোর, পাকিস্তান)
লাহোরের রাজকীয় মসজিদ এটি। ৬ষ্ঠ মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ১৬৭১ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৬৭৩ সালে। পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৫ম বৃহৎ মসজিদ এটি। মুঘল আমলের নানা নিদর্শন এই মসজিদ নির্মাণকাজের মধ্যে পাওয়া যায়।
 
১ ০. সুলতান মসজিদ (সিঙ্গাপুর)
সুলতান মসজিদকে বিবেচনা করা হয় সিঙ্গাপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ হিসেবে। মসজিদটি নির্মাণ হওয়া থেকে এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত অবস্থায়ই রয়েছে। অর্থাৎ যেমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল ডিজাইনে কোনো ধরনের মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়নি। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৮২৪ সালে এবং শেষ হয় ১৮২৬ সালে।

Friday, July 1, 2016

কাঁচা খাওয়াই ভালো রান্না করে/ সিদ্ধ করে খেলে তুলনামূলক খাদ্য উপাদান কমে যায়। যার ফলে পরিপূর্ণ শরীরের ক্ষয় পূরণ করতে পারে না।



 কাঁচা খাওয়াই ভালো রান্না করে/সিদ্ধ করে খেলে তুলনামূলক খাদ্য উপাদান কমে যায়।

***************************



#কিছু খাবার রান্না করে খাওয়া গেলেও শরীরের জন্য কাঁচা খাওয়াই ভাল। কারণ এগুলোর খাদ্যগুণ অটুট থাকে কাঁচা অবস্থাতেই। তাই রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি এগুলো কাঁচা খেতে পারেন। নিচে দেখুন এমন আট খাবারের নাম ও ছবি।
image (2)
বেল পেপার- ১৯০ ডিগ্রির বেশি তাপে রান্না করলে এর ভিটামিন-সি নষ্ট হয়ে যায়।
image (3)
ছোলা – রান্না করে খেলে ছোলার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
image (5)
বাদাম ভাজলে তাঁর ভিতরে ক্যালরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আর কমে যায় ম্যাগনেসিয়াম আর আয়রনের পরিমাণ।
image (6)
ব্রকলি- সেদ্ধ করে খাওয়াও ভাল। তবে রান্না করলে ব্রকলির খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
image (8)
নারকেল- বেশ কিছু রান্নায় নারকেল দিয়ে রান্নার স্বাদ বাড়ে কিন্তু পুষ্টিগুণ কমে যায়।
image
রসুন- খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রসুন খেয়ে এড়ানো যেতে পারে।
image (1)
বিট- রান্না করে খেলে বিটের ২৫ শতাংশ পুষ্টি গুণ কমে যায়।
image (4)
পেঁয়াজ- পেঁয়াজ রান্না করে খাওয়ার থেকে বেশি উপকার কাঁচায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা পেঁয়াজ ফুসফুস ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

#সাদাকাতুল ফিতরের নিয়ামাবলি:::::::::::::::::: জেনে রাখা ভালো।



 







:সাদাকাতুল ফিতরের নিয়ামাবলি:

#মুফতি হাশমতুল্লাহ : সাদাকাতুল ফিতর ইসলামি শরিয়তে ওয়াজিব একটি ইবাদত। সাদাকাতুল ফিতরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈদের খুশিতে গরিব শ্রেণির লোককেও শামিল করে নেয়া। কেননা ঈদের নামাজের আগেই যখন একজন অভাব-অনাহারি লোক কিছু পায়, তখন তা আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিক বিবেচনা করলে সাদাকাতুল ফিতর হচ্ছে রোজার জাকাত। জাকাত যেমন সম্পদকে পবিত্র করে, তেমনই ফিতরাও রোজাকে পবিত্র করে।
মানুষ ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়, রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ করে সাদাকাতুল ফিতর। মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। ঈদের দিন সুবহে সাদিক থেকে ফিতরা ওয়াজিব হয়। কাজেই সুবহে সাদিকের আগে কেউ মারা গেলে তার ফিতরা দেয়া ওয়াজিব নয়। গৃহকর্তার কোনো সন্তান যদি সুবহে সাদিকের আগে জন্মগ্রহণ করে, তবে তার ফিতরা দিতে হবে। এরপর জন্মালে ফিতরা দিতে হবে না। এ হুকুম সুবহে সাদিকের পর কেউ মুসলমান হলে তার ওপরও। গম, গমের আটা, জব, জবের আটা এবং খেজুর ও কিশমিশ দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়। গম বা গমের আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে গম অর্ধ সা’ (১ কেজি ৬৬০ গ্রাম) এবং জব বা জবের আটা কিংবা খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা’ (৩ কেজি ৩২০ গ্রাম) দিতে হবে। রুটি, চাল বা অন্য খাদ্যদ্রব্য দিয়ে ফিতরা দিতে হলে মূল্য হিসেবে দিতে হবে। কিশমিশ দিয়ে ফিতরা আদায় করলেও এক সা’ দিতে হবে।
দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম। অন্যান্য সময় মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা উত্তম। ঈদুল ফিতরের আগে ফিতরা আদায় করা জায়েজ। ঈদুল ফিতরের দিন আদায় না করলেও পরে তা আদায় করতে হবে। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে ফিতরা আদায় করা মুস্তাহাব। নিজের এবং নিজের নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। স্ত্রী এবং বালেগ সন্তানেরা ফিতরা নিজেরাই আদায় করবে। স্বামী বা পিতার ওপর স্ত্রী-সন্তানদের ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে দিয়ে দিলে আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু পরিবারভুক্ত নয়, এমন লোকের পক্ষ থেকে তার অনুমতি ছাড়া ফিতরা দিলে আদায় হবে না।
কোনো ব্যক্তির ওপর তার পিতামাতার, ছোট ভাই বোন ও নিকটাত্মীয়ের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। এক ব্যক্তির ফিতরা এক মিসকিনকে দেয়া উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকেও দেয়া জায়েজ। [ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : খণ্ড- ১, পৃষ্ঠা- ১৯২, কানযুদ্দাকায়িক : পৃষ্ঠা- ২৪]
শিক্ষক. মা’হাদুত তরবিয়াতুল ইসলামিয়া, ঢাকা।